কাশ্মীরে মধ্যস্থতা: ট্রাম্পের মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় সংসদ, ওয়াক আউট বিরোধীদের, কোনও অনুরোধ করেননি মোদি, সাফাই বিদেশমন্ত্রীর

এদিন বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করা হয়েছে। সংসদে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও মোদি কখনই এমন আবেদন ট্রাম্পকে করেননি বলে জানিয়েছেন।

एबीपी माझा वेब टीम Last Updated: 23 Jul 2019 03:35 PM
বিদেশমন্ত্রকের জবাব সত্ত্বেও কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতা-মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতি দাবি করে লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করল বিরোধীরা।
এদিন সভার কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস সহ কয়েকটি বিরোধী দল স্লোগান দিতে শুরু করে। সোমবার, ট্রাম্প দাবি করেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে তাঁকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। জিরো আওয়ারে, কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, যেহেতু অভিযোগটি গুরুতর, তাই প্রধানমন্ত্রীকেই এর জবাব দিতে হবে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ট্রাম্পের এই দাবি ভারতের অবস্থানের পরিপন্থী। জয়শঙ্করের সাফাইও তিনি খারিজ করেন।
মোদির জবাবের দাবি তোলেন এডিএমকে নেতা টি আর বালুও। তিনি বলেন, যেহেতু ট্রাম্পের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নাম উঠে আসছে, তাই তাঁকে এই নিয়ে জবাব দিতে হবে। জয়শঙ্কর যখন জবাব পেশ করতে উঠে দাঁড়ান, গোটা বিরোধী বেঞ্চ একজোট হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। তুমুল হই-হট্টগোলের মধ্যে জয়শঙ্করের জবাবি বক্তব্য কার্যত চাপা পড়ে যায়। এরপর, বিরোধীরা লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করে।
সেই সময়, জয়শঙ্কর লোকসভায় তাঁর বক্তব্য পেশ করেন। মূলত, রাজ্যসভায় পাঠ করা বিবৃতিই তিনি নিম্নকক্ষে পাঠ করেন। বিরোধীশূন্য লোকসভাতে বিদেশমন্ত্রী জানিয়ে দেন, কাশ্মীর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি কখনই ট্রাম্পকে মধ্যস্থতা করার অনুরোধ করেননি। আরও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যের যে কোনও সমস্যা একমাত্র দ্বিপাক্ষিক স্তরেই সমাধান সম্ভব। জয়শঙ্কর মনে করিয়ে দেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কোনওপ্রকার আলোচনার পূর্বশর্ত হল সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতায় মদত বন্ধ করতে হবে। বিদেশমন্ত্রকের দাবি, সিমলা ও লাহোর চুক্তি মেনেই দুদেশের মধ্যে আলোচনা করতে হবে।
বিরোধী হই-হট্টগোল ফের শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্বে। স্পিকার ওম বিরলা জানান, যে ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। ফলে, এই নিয়ে রাজনীতি না করে জাতীয় স্বার্থের কথা ভাবা উচিত। সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, বিরোধীদের এহেন আচরণ কাম্য নয়।
ট্রাম্পের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয় কংগ্রেস। রণদীপ সুরজেওয়ালার ট্যুইট, ভারত কোনও দিন তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মানেনি। কাশ্মীরে একটি বিদেশি শক্তিকে মধ্যস্থতা করতে বলে দেশের স্বার্থকে বলি দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে এর উত্তর দিতে হবে। লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জবাব দেওয়া উচিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাঞ্চল্যকর দাবি ঘিরে তোলপাড় সংসদ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য খারিজ করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাজ্যসভায় জানিয়ে দিলেন, কাশ্মীর ইস্যু দ্বিপাক্ষিক বিষয়।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীর প্রশ্নে তাঁর কাছে মার্কিন হস্তক্ষেপের আবেদন করেছেন এবং তিনিও সাহায্য করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ নিয়ে বিরোধীরা শোরগোল তোলায় জয়শঙ্কর জানিয়ে দিলেন, প্রধানমন্ত্রী কখনই ট্রাম্পের কাছে এমন অনুরোধ করেননি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যাবতীয় বিরোধের মীমাংসা, আলোচনা শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক স্তরেই হতে পারে। সেখানে কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার জায়গা নেই।

ওয়াশিংটনে মার্কিন সফররত পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকে মোদির তাঁকে মধ্যস্থতার অনুরোধের প্রসঙ্গ তোলেন ট্রাম্প। আজ রাজ্যসভায় বিরোধীরা এ নিয়ে সরকারকে চেপে ধরায় জয়শঙ্কর বলেন, পরিষ্কার জানাতে চাই, এমন কোনও অনুরোধই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে করেননি প্রধানমন্ত্রী।

ভারতের বরাবরের অবস্থান এটাই যে, পাকিস্তানের সঙ্গে যাবতীয় বিরোধ মেটাতে হবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার রাস্তায়। আর পাকিস্তানের সঙ্গে যে কোনও আলোচনার শর্ত হল সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিমলা ও লাহোর চুক্তিই সব সমস্যা দ্বিপাক্ষিক স্তরে মেটানোর ভিত্তি বলেও জানান জয়শঙ্কর।

যদিও বিরোধীরা এই বক্তব্যে খুশি হতে না পেরে দাবি করেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে সভায় এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে। এ নিয়ে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় বিরোধীদের। বেলা ১২টা পর্যন্ত সভা মুলতুবি করেন বেঙ্কাইয়া। জয়শঙ্কর বলেন, সভায় তাঁর স্পষ্ট বক্তব্যের পর দেশবাসীর মনে এ ব্যাপারে আর কোনও বিভ্রান্তির জায়গাই নেই।

তার আগে বেঙ্কাইয়া বলেন, তিনি কংগ্রেসের উপনেতা আনন্দ শর্মা ও সিপিআইয়ের ডি রাজার কাছ থেকে রুল ২৬৭-র আওতায় নোটিস পেয়েছেন, যাতে দিনের সভার কাজ স্থগিত রাখার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তিনি নোটিসটি গ্রহণ করছেন না। তবে বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে জিরো আওয়ারের বিষয় হিসাবে তোলার অনুমতি দিচ্ছেন। জবাব দেবেন বিদেশমন্ত্রী।

पार्श्वभूमी

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার আবেদন করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই দাবি সত্যি হলে বলতে হবে, মোদি দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছেন। বললেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস নেতার ট্যুইট, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার কথা বলেছেন। এটা সত্যি হলে তো প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতের স্বার্থ ও ১৯৭২র সিমলা চুক্তিকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন!





এদিন বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করা হয়েছে। সংসদে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও মোদি কখনই এমন আবেদন ট্রাম্পকে করেননি বলে জানিয়েছেন। কংগ্রেস অবশ্য সরকারের এই দ্ব্যর্থহীন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে যে, কাশ্মীর ইস্যুতে কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার জায়গা নেই। তবুও কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদি কেন ট্রাম্পের দাবি নিয়ে ‘নীরব’।
রাহুলও ট্যুইটে বলেন, বিদেশমন্ত্রক যেভাবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে, তা ‘দুর্বল’। এতে কাজ হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নিজে দেশবাসীকে জানানো উচিত, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকে কী কথা হয়েছিল।




- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -

TRENDING NOW

© Copyright@2024.ABP Network Private Limited. All rights reserved.